যাকাতের বিবরণ
যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত। কুরআন মজীদে বহু স্থানে সালাত-যাকাতের আদেশ করা হয়েছে এভং আল্লাহর অনুগত বান্দাদের জন্য অশেষ ছওয়াব, রহমত ও মাগফিরাতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধিরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
হাদীস শরীফে এসেছে, যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু সে তার যাকাত দেয়নি কিয়ামতের দিন তা বিষধর স্বর্পরূপে উপস্থিত হবে েএবং তা তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার উভয় অধরপ্রান্তে দংশন করবে এভং বলবে, আমিই তোমার ঐ ধন, আমিই তোমার পুঞ্জিভূত সম্পদ। (সহীহ বুখারী, হাঃ ১৪০৩)
যাকাতের পরিমাণ বা নিসাব কী
রূপা ৫৯৫ গ্রাম (৫২.৫০ ভরি) কিংবা স্বর্ণ ৮৫ গ্রাম (৭.৫০ ভরি) অর্থ স্বর্ণ বা রূপা যে কোনো একটির নিসাবের মূল্য পরিমাণ অর্থ-সম্পদ বা ব্যবসায়িক সামগ্রীকে যাকাতের নিসাব বলে।
কোনো ব্যক্তি মৌলিক প্রয়োজন পূরণের পর যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ তার মালিকানায় থাকে এবং চন্দ্র মাসের হিসাবে এক বৎসর তার মালিকানায় স্থায়ী থাকে তাহলে তার উপর এ সম্পদ থেকে চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত রূপে প্রদান করা ফরজ। মনে রাখতে হবে বছরের শুরু ও শেষে এ নিসাব বিদ্যামান থাকা জরুরি। বছরের মাঝখানে এ নিসাব পূর্ণ না থাকলেও যাকাত প্রদান করতে হবে। আর যাকাত দান করার সময় নিয্যত রাখতে হবে, আমি এসব টাকা-পয়সা বা মালপত্র যাকাত হিসেবে দান করছি। নিয্যত না করলে যাকাত আদায় হবে না, বরং নিয্যত ছাড়া যা দান করা হয়েছে সেজন্য পৃথক সওয়াব পাওয়া যাব।
সম্পদের প্রত্যেকটি অংশের উপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয় বরং শুধু নিসাব পরিমাণের উপর বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত। অতএব, বছরের শুরুতে শুধু নিসাব পরিমাণ অর্থ-সম্পদ থাকলেও বছরের শেষে যদি সম্পদের পরিমাণ বেশী হয় তাহলে ওই বেশী পরিমাণের উপর যাকাত প্রদান করতে হবে। বছরের যে কোনো অংশে অধিক সম্পদ যোগ হলে তা পূর্ণ এক বছর অথিবাহিত হওয়া শর্ত নয়। যাকাত ফরজ হওয়ার ক্ষেত্রে মূল নিসাবের উপর বছর অতিক্রম করা শর্ত। যাকাত, যাকতুল ফিতর, কুরবানি এবং হজ্জ্ব এ সকল শরীয়তের বিধান সম্পদের মালিকানা সাথে সম্পৃক্ত।